রবি স্বপন
////////////////////////
সখি,
আমার লাবণ্যকে দেখেছো?
তোমার সরলতায় গড়েছিলেম যারে?
সখি,
আমার মানসীকে পড়েছো?
কী বলো কবি?
কীভাবে শতবর্ষ আগে
আঁকলে আমার ছবি?
তুমি কী ভুলেছো সখি,
ইছামতির দিন?
তুমি কী দেখোনি সখি,
কেমন দুর্দান্ত রবি ক্লান্তিহীন?
কবি স্বপনেই যদি এলে,
একটা গান রচে যাও
প্রিয়ের পেমানলে।
পৃথিবী যাই বলুক,
তোমার তরে রচেছি পিয়ে
হিয়ার কথা।
যুগে যুগে তুমি প্রিয়া
মুছবে প্রিয়ের মর্মব্যথা।
যুগে যুগে সখী তুমি
চঞ্চলা -
সরলা,
মোহিনীরূপে সখীরে
কাব্যে রাখি দিনমান প্রাঞ্জলা।
মায়াময় কনকদর্পনে বিম্ববতীর কথা
রচেছি রূপকে তোমার।
সুবর্ণ মুকুরে করেছি
শুভদৃষ্টি প্রেমী আশার।
তবে কী সেদিন কবি
আমার রাঙ্গামাটিরেও জানতে?
আজ দ্বিধা নেই তোমার
প্রথম বনফুল
সার্থক বলে মানতে!
স্বপন শেষে তো চলে
যাবে কবি!
যেটুকু প্রিয়ালাপ,
বর্তমানের জোয়ারে
মুছে যাবে সবি।
সখি ভাবো কেনো!
আমি যে তোমার হিয়ায়!
যতই লিখবে,
মোহিত হবে রবি প্রেমের
মায়ায়।
শূণ্যতার ক্যানসার
////////////////////////
প্রোট্রেটের প্রতিধ্বনিতে
ক্যানসার
শূণ্যতার,
দেয়ালঘড়িটা
তাই
নৈশব্দের
আঁধারে
জুড়ে
দেয়
প্রেতের
চিৎকার।
পাথর চাপা অঙ্কুরির
শ্বাসরোধের কষ্টে
অনিকেত আঁখির জ্বলোচ্ছাস,
শূণ্যতার কলঙ্ক লেপ্টে
স্মৃতির মিউজিয়ামে আক্ষপী দীর্ঘশ্বাস।
ছেড়ে আসি
ইটের ভাঁজে ভাঁজে নষ্ট
কষ্ট!
একাকীত্বের একান্ত যুদ্ধে
লাইটপোষ্টের নীচে
আত্মহনন হত্যাষজ্ঞ!
ক্লান্ত দৃষ্টি ঝলসে দিয়ে
পাশ কেটে যায়
সিটি সার্ভিসের আদিম উল্লাস!
আজ হিমশীতল লাশকাটা ঘরে,
বিবর্ণ ভাবনার লাশ -
কালরজনী পার করে।
ভালবাসা '
র চারধ্বনি চাপা
পড়ে
লাল নীল চাহিদার ধ্বংসস্তুপের
নীচে,
হলুদ গেড়ুুয়া ছিড়ে বাউলা
নুড়ির গায়ের রক্তচিহ্ন মুছে।
করোটির ধু ধু প্রান্তরের
ঘৃণার দাবানলে প্রীতি।
বিশ্বাসের নীল সরোবরে
মিছে জলের রেখা টেনে
ডুবে যায় পানসে প্রতিশ্রুতি।
তুমি এসে থমকে দাঁড়াও
আর্তনাদের সায়রে।
জোয়ারের গর্জনে -
আর্তনাদ সরে যায় চোরাবালি
চরে।
আপন হয়ে এসো
(
জেবুন্নেসা সিমী)
যখনি খোঁচা দাড়িতে হলুদ
চাঁদর
জড়িয়ে সামনে এসে দাঁড়াও,
আমি জীবনানন্দ -
স্বপনে ইতি টানি।
আবেগে জড়াতে চাই,
পলকে থমকে যাই,
পারিনা বাঁধতে প্রেমাডোরে
মহাপুরুষের হৃদয়খানি।
অতি স্বাভাবিক হয়ে এসো
হাত ধরে চলবো।
রবীন্দ্র পোশাক ছেড়ে এসো
জীবনের কবিতা বলবো।
কবি কবি বেশবাস ছেড়ে
এসো,
টি -
শার্টের খোলা বুকে
সিঁদুরের রং ছড়াবো।
সাধারণের দৃষ্টি নিয়ে এসো,
পরিপাটি আশার আজীবন দলিলে
স্বাক্ষর দিয়ে দেবো।
একটি নাকফুল এনো কিন্তু,
এ আমার সংস্কার।
মনটি কোথাও ছেড়ে এসোনা,
এ আমার অধিকার।
গাড়ি -
বাড়ি,
বেনারসিতে
মন লাগেনা আমার,
শুধু শব্দ হতে চাই
প্রেমি কথার।
সকাল বেলা মিষ্টি কথার
সুড়সুড়িতে ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেবো।
বিরক্তিতে চোখ খুললে
চায়ের ট্রে থেকে গোলাপ
তুলে দেবো।
মিষ্টি করে চুমু দিয়ে
কপালে তোমার,
শেখাবো গল্প ভালবাসায়
ভালো থাকার।
ক্লান্ত -
শ্রান্ত হয়ে
ঘরে যখন ফিরবে,
এক কাপ ভালবাসার লিকার
হাতে ধরিয়ে দেবো।
গোধুলীর সাথে বসে,
হলুদ -
লাল আভায়
গোলাপী মন ভেজাবো।
চাঁদনী রাতে লনে বসে
দুজন
দূর পাহাড়ের কথা বলবো।
কখনো -
সখনো না হয়
নীলাচলের দেশে যাবো।
অতি সাধারণ হয়ে এসো,
হৃদয়ের মখমলি মসনদ দেবো।
অতি আপন হয়ে এসো,
স্নিগ্ধ প্রেমের ভালবাসা দেবো।
আরো একবার
(
জেবুন্নেসা সিমী)
অভিজাত পাড়ার ওয়াইন উৎসবে
গণতন্ত্রের
মৃত্যুচিৎকার।
তোমার
নষ্ট
শহরের
ভাইরাসে
মফস্বলের
গায়ে
লেপ্টে
গেছে
কলঙ্কের
ধুতি।
ফাগুনের
বাউলা
বাতাসে
আজ
পঁচা
রক্তের
গন্ধ!
প্রতারক
প্রেমাবাসের
ঝাড়বাতির
ঝলসানিতে
অনিকেত
বিদির্ণ
সবুজ।
আমি তবু
চিরতরুন সকালের আত্মবিশ্বাসে দাঁড়িয়ে,
প্রতিদিন পতাকায় সালাম দেই।
আমি তবু
সদ্যস্নাত বৌঠানের প্রথম সিঁদুরের মতো
সত্য প্রতিশ্রুতি।
তুমি নিশাচর আততায়ীর
রক্তে লেখো মঞ্চ নাটক।
কালের উপন্যাস ভিজে যায়
রক্তের ছিটায়।
ভবঘুরে বিশ্বাসেরা তোমার
বার্ধক্যের লাঠি ধরে এড়িয়ে
যায় কর্তব্যের চৌকাঠ।
তোমার কলমের পেট ভর্তি ভেজাল কালিতে
আজ মুক্তির বিকৃত গল্প শেষ।
আরেকবার অগ্নিঝরা মার্চে
বুকের রক্তে লিখবো আমার বাংলাদেশ।