Saturday, April 12, 2014

কুড়ি দৃষ্টির ঘৃন্য অবজ্ঞা



কুড়ি দৃষ্টির ঘৃন্য অবজ্ঞা
কচি কন্ঠের কর্কশ আকুল উচচারণ,
“আফা দুইডা ট্যাকা দেন।”
প্রতিক্ষিত সবুজ বাতির দৃষ্টি ফিরিয়ে তাকালাম পাশে,
কুচকুচে এক কঙ্কাল দাড়িয়ে সি এন জির কাছে।
অপলক দৃষ্টিতে আবিষ্কার করছি ক’টা হাড় দৃশ্যমান!
“আফা দিবেন?” সম্বিৎ ফিরে পেলাম।
ব্যাগ হাতরে ১ টি বিশ টাকা বের করতেই-
সি এন জি ড্রাইভারের ধমক খেলাম।
আপা দিয়েন না, এরা মিথ্যে বলেই টাকা কামাই করে,
অবাক আমি।
একটু আগেই এই সি এন জির ড্রাইভার,
বলেছিল, উত্তর বাড্ডা গেলে আড়াইশ টাকায় পোসাবেনা তার।
“ট্রাফিক জিজ্ঞেস করলে কিন্তু মিটারে যাচ্ছেন বলতে হবে আপনার।”
দিব্যমান মিথ্যেকে প্রতিবাদ না করে কচিমুখটিতে মন দিলাম।
চামড়ার উপর হাড়ের দখনিতে আর জিঘাংসু দৃষ্টিতে-
মানচিত্র চিবানোর ক্ষুধা দেখলাম!
হাত বাড়াতেই ছো মেড়ে নিল বিশটি টাকা।
বললাম একটু দাঁড়াও।
তুমি কোথায় থাক? তোমার বাবা-মা নেই?
কচি মুখের মর্মবাণী-
“বাপ কৈ কেডায় জানে,
মা গেলে বছর মইর‌্যা বাঁচছে জানে।”
হাস্যকর জেনেও বললাম, তুমি পড়না?
“আফা এত্তো প্যাচাল পাইড়েন না।”
ছয় বছরে ময়লা জামার কুড়িমুখটি যেন অবজ্ঞা উপেক্ষায়-
দেখিয়ে দিল অবস্থানটি আমার!
তার চোখে পড়লাম-ঘৃন্য আমাকে, মেখে নষ্টরেণু সমাজের!
তবু শেষ বার বললাম, যাবে সাথে আমার?
“মাফ করেন আফা, বহুত পিডা খাইছি,
অহন রাস্তাত থাইক্যা শক্ত হইয়্যা গেছি।”
“একদিন আমিও পিডা দিমু ,
আফনেগো যত ভদরের মুখে আগুন জ্বালামু।”
সবুজ বাতি জ্বলে উঠল, ভদ্রতার মুখোশ বাঁচাতে।
যেন এমনি করে চায় ভদ্রনামি সমাজ সার্থ সিদ্ধিতে।
নীতি কথা উপহাসিত পথকুড়ির চোখের ভাষায়!
অবজ্ঞায় মনুষ্য প্রেমের লাশ সমাধিত ফার্মগেটের পিচঢালায়!
ছ’বছরের নির্বাক দৃষ্টি দেখেছে, সমাজের যত নগ্নতা!
বেঁচেথাকার উদ্দেশ্য, তাই এখন তার নিষ্ঠুরতা!
বেঁচে থাকা যার একটি বিশাল প্রশ্ন,
সমাজ কী দেবে তার উত্তর?
পথকুড়ি কী জানবে মনুষ্যত্ব দাঁড়িয়ে আছে-
স্নেহ মমতা ভালোবাসা নিয়ে,
নাকি কচিকুড়ি ঝড়ে যাবে-
কখনো পথে জীবন দিয়ে!

Wednesday, April 9, 2014

জানি মা



জানি মা
অক্লান্ত দুর্জেয় ভালবাসা মা তোমার,
বিধাতার শ্রেষ্ঠ উপহার!
অন্তরে যত ব্যাথা,
ম্লান -মাগো মিষ্ট বোলে,
তোমার ভালবাসার আবীরে
দুঃখগুলি আমার রঙ্গীন সুখ!
উদয়াস্ত কষ্ট আমার,
কমবখত-নিয়তির উপহার,
নিখাদ ভালবাসার কাছে,
মেনেছে যে হার!
তোমার আখিঁ সিক্ত করেছ-
আমার অশ্রু তুলে|
নিয়তি,
জন্মেছি কষ্ট দিবো বলে!
জানি মা,
সকল দুঃখই আমি!
অক্ষম আমি|
ক্ষমা করো মা,
ক্ষমাটুকুই আমার কাছে-
এখন অনেক দামি|

তবুও বিজয়ী!

তবুও বিজয়ী!
মাথাটা ভীষণ ফাকাঁ|
কী একটা ভূল!
শূণ্যতা আর শূণ্যতা!
অন্ধকার গ্রাস করছে আমায়!
অচেনা আনন্দ-
ছোয়াঁর আশায় উম্মুক্ত দ্বারে,
বিজয়ী কষ্টেরা দাড়িয়ে|
চারদিক নিস্তব্ধ!
শুধু কষ্টের উল্লাস!
দূরে - বহুদূরে রাজপথ|
সিকিভাগ এসেছি মাত্র!
হাতে ধরা হাত
কখন যে ছেড়েছি,
কখন যে-
একা চলতে শিখেছি!
নিঃসঙ্গ কষ্টের পাহাড়ায়,
চলেছি স্মৃতি রোমন্থনে!
মুসাফির চলেছি,
অন্তহীন যাত্রায়!
পিছুটানেরা-
বাধঁতে পারেনা,
রঙ্গনিপুন পৃথিবীর-
আমি বিজয়ী পথিক!

নোনা জলের হাসি

নোনা জলের হাসি

জীবনের প্রহসনে নিঃস্ব স্বদ্বীপ!
দীপাবলীতে একাকী অন্ধকার!
টলমল পায়ে-
পালিয়ে যাচ্ছি জীবন থেকে|
পিপাসার্ত হৃদয় পান
করে চলেছে অশ্রুসাগর|
আখিঁ নেত্রে-
তোমার চঞ্চল দৃষ্টি আকুল|
অশ্রুবিন্দুকে তোমায়
ছুতেঁ দিবোনা বলেই
গিলে চলেছি নোনা জল|
হৃদয়ের তৃষ্ণা আজ
হবে পূর্ণ অশ্রুপানে|
আমার এ পরিপাটি কাজল
শুধু দৃশ্যমান থাকুক তোমার নয়নে|
প্রহসন আমি আজ যবনিকায়,
তোমার জন্যে|
তুমি চলে যাও জীবন,
নতুন আমন্ত্রণে|
এখানে মৃত্যুর ছায়া
আর ঘুটঘুটে আধাঁর,
পেরিয়ে যাও সঙ্গোপনে|
হেসেছি বিদায়ে,
কাদিঁনি কখনও,
চিরদিন শুধু এটুকু রেখো মনে ।

Sunday, April 6, 2014

কষ্ট আঙ্গিনায় প্রিয় স্মৃতি




কষ্ট আঙ্গিনায় প্রিয় স্মৃতি
কষ্ট আধিপত্যে-বিবর্ণ দিনমান সূর্য্য,
নির্ঘুম রাতেরা-প্রেতোল্লাসে নাচে একাকীত্বের ঘরে।
অবিনাশী স্মৃতি-অমরার স্বপ্নে বিঘোর,
উপেক্ষিত প্রেম মন্দিরের-
বিদ্রোহী আর্তনাদ চোরাবালি পাড়ে।

চোখের জলের স্থায়িত্বেত্ত হাসতে পারি আমি।
যখন মনে পড়ে-অদ্ভুত সুন্দর সেই বিকেলে,
তোমার অস্থির চোখে-
আমার নির্বাক চোখ ছুয়েঁছ তুমি।

অশ্রুসিক্ত নেত্রে আমিত্ব-
হেসে উঠে অতীত অধ্যায় পড়ে,
চোখের জলে হাস্যরত আমাকে নিয়ে-
বিজয়ী চিত্র আঁকো তুমি জীবনের ঘরে।

আপন আস্তিত্বে, কী অসাধারণ অভিনয়।
আমার সাথে কী জীবনের সাথে জানিনা।
তবু তোমার অসাধারণতায়-
হৃদয় আজো মুগ্ধ হয়।

ভালোবাসার কবরে প্রদীপ জ্বেলে-
আলোকিত করেছি শ্মশান!
আপন খুনে সিঁথি রাঙ্গিয়ে-
ঘুচেছি নিয়তির বদনাম!

নিষ্টুর! নির্দয়! কোনো উপমায়-
তিলক পরাতে পারিনা তোমায়।
হৃদপিন্ডে আঁকা যে প্রিয়-
হাসোজ্জ্বল মুখ, চিরচাওয়ায়।

ঘৃণার উপত্যকা থেকে,
ফিরে এসেছি বার বার।
সেখানে প্রিয় স্মৃতিদের-
সমাধিস্থ করতে পারিনা।
এ অপরাগতা আমার-
শুধুই বেচেঁ থাকার ছলনা।

এ জীবন শুধু কেনো?
পরজীবনেও ভালোবাসবো তোমায়।
আজ নতজানু হই তবু একটি চাওয়ায়।

মুসাফির বেশে, হৃদয়ের গলিতে- আর পা রেখোনা।
প্রিয় স্মৃতিদের কেড়ে নিতে- কৃষ্ণপক্ষে আলো জ্বেলোনা।