Monday, October 13, 2014

শিমুল



শিমুল

শিমুল তোমার কোনো ভাষা নেই,
তবু পৃথিবী তোমায় চায়,
নিরব রক্তিমায় সকল প্রাণ করেছ জয়,
একান্ত কোনো কষ্ট কী নেই তোমার,
নেই কী তব ঝরে পড়ার হাহাকার?

নিষ্পাপ ভোরের আলোয় সেজেছ লালিমায়
কার বুক চিড়ে
তোমায় করেছ দান, রক্তের ভান্ডার?
পেয়েছ কী শুধুই হৃদহরণের অহংকার?

নিঃসঙ্গতা কখোনো
কী ছুয়ে যায়নি তোমায়?
নেই কী কোনো ভালবাসা
ঐ নিঃসঙ্গ বৃক্ষের তরে?

যে তোমায় জীবন দিয়েছে,
ঝরে যাও কিগো তারে একা করে?
তবু তোমার নেই কোনো পাপ!
কারণ সর্বাঙ্গে রয়েছে তোমার
সৌর্ন্দয্যের অভিশাপ।

Thursday, October 9, 2014

ময়ুরী



ময়ুরী
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
(জেবুন্নেছা)
আমি একটি কিশোরীর কথা বলছি ।
বয়স যার হয়নি এখনো পনের,
আমি সেই ময়ুরীর কথা বলছি ।
সংসার যার মাথায় তুলে দিয়েছে,
কষ্টের তটস্থ অষ্টপ্রহর !
আমি সেই ময়ুরীর কথা বলছি ।
কয়েকটি বকুলের মালা,
বিক্রি নাহলে অসুস্থ মা
আর ছোট ভাইয়ের অন্ন যার জোটেনা,
আমি তার কথা বলছি ।
সারাদিন পর যার শতাব্দীর ক্ষুধা মেটেনা,
আমি সেই ভুখা ময়ুরীর কথা বলছি ।
তবু চলে যায় দিন এক বেলা খেয়ে নাখেয়ে,
টানাপোড়েন আর অবজ্ঞা-অবহেলা,
গা গিয়েছিল সয়ে ।
প্রকৃতির নিষ্ঠুরতায় ঘড়ির ধারালো
কাটার উপর পা রেখে,
রক্তাক্ত ছাপ বয়ে যে আগুসার !
আমি তার কথা বলছি ।
তবু সাধ মেটেনা নিয়তির !
চিল-শকুনের সভ্যতায়,
ময়ুরী যে নারী !
শকুনের তৃপ্তির ঢেকুঁরে,
বকুলের তলায় পরে রইলো-
মানবতার ছিন্ন ভিন্ন লাশ !
আমি তার কথা বলছি ।
অন্ধ সমাজ জানতে পারেনি
বকুলের দীর্ঘশ্বাস,
শুনতে পায়নি অসুস্থ মা
আর ছোট ভাইটির চিকার ।
আমি ময়ুরীদের কথা বলছি !
আমি আমার অন্ধ-
বোবা সমাজকে বলছি ।
হাজার হাজার ময়ুরীর
জীবনের নিরাপত্তা চাইছি ।
আমি অকালে ঝরে যাওয়া
ময়ুরীকে নয় !
সমাজের জন্য ময়ুরীর নিজ হাতে গাঁথা
একখানা বকুলের মালা চাইছি ।
◘◘◘◘◘◘

Saturday, October 4, 2014

বিপ্রতীপতায়



বিপ্রতীপতায়
≈≈≈≈≈≈≈≈≈≈
(জেবুন্নেছা)

শতাব্দীর পথে হেঁটে চলমান আকাশ
মৃতমৃত্তিকার বুকে মুখ গোঁজে।

আর তুমি?
চিরবর্তমান দিগন্তে স্বপ্নবিলাসী শঙ্খচিলের
প্রিয় ডানা কেটে দিয়েছ!

একটি কবিতার গল্পে তোমার শব্দকোষে
গড়েছি সুখের মিনার,
তবু তুমি জীবন্ত লাশের পিরামিড
গড়েছ কবিতার উঠোনে!

ভাবনি, নির্মলেন্দু প্রিয়ার জীবন হবে
মরা ভাটার কালবেলা!
ভাবনি, দুর্ভিক্ষের রাতে
শ্রীকান্তের দুর্জেয় সুরের
মেডিটেশনে ভাসানো ভেলা।

আধ টুকরো স্বপ্ন ভিক্ষায়,
রাতভর তোমার চোখে অপেক্ষমান।
তুমি মেঘেদের সাথে মিতালী করে
চাঁদে জুড়েছো কলঙ্ক।

তবু তোমার বুকের আস্তিনে
নাম লিখবো বলে ছুঁয়ে দিয়েছি
জ্যোস্নাঙ্কিত টি-শার্ট!

তোমার বালুচরে বালির প্রাসাদ
গড়েছি নিযুত যুগ ধরে!
সমুদ্রকে বুকে নিয়ে নিমেষেই
মুছে দিয়েছ মহানগরের বাণী।

ধুতোরা বাগানের স্বপ্নগুলো
নিষ্পৃষ্ট করেছ আকাশগঙ্গায়!
উত্তাল সমুদ্রে-
ঝড়ের ডানা ঝাপটানো ছন্দে,
বিভ্রান্তি মত্ত বিপ্রতীপতায়।
[০৪/১০/১৪]
•••

Thursday, October 2, 2014

অচেনা অনুভূতি



অচেনা অনুভূতি
**************
স্বপ্নের স্ক্রিনে একের পর এক রং ফেলে
তুমি হঠাগলির মুখে দাঁড়ালে,
মোহবিষ্টের মতো স্বপ্ন হাতড়ে উজ্জ্বলতা খুঁজছি
অচেনা তোমায় দেখবো বলে ।

শিউলী বিছিয়ে দিয়েছি
এনেছি রক্ত করবী,
সূর্য্যের থালায় বরণে
এনেছি অষ্টাদশী সুরভি ।

মেরুপ্রভার স্নিগ্ধ চতুরঙ্গ ছেড়ে
পা বাড়ালো রোদেলা গান ।
মখমলি আঁচলে
বিছিয়ে দিয়েছি মম প্রাণ ।

পবিত্র চাহনি বাঁধতে এনেছি
লক্ষ্মী চোখের জ্যোতি ।
চোখে চোখ ছুঁলে!
দমবন্ধ সুখে ঢোঁক গিলে
তৃষ্ণার্ত চিত্তে অচেনা অনুভূতি ।

ছুঁয়ে দিবে বলেই
আশার হাত বাড়ালাম!
একরাশ সুখ স্পর্শে
মোহন দর্পণে প্রতিবিম্ব আঁকলাম ।

এ প্রথম স্পর্শ!
এ স্পর্শে সুখের আর্তনাদে
নেশাতুর স্নায়ুর উম্মাদ কথন ।
দেবতার চিত্ত হরণে
স্বর্গময় আলোড়ন ।

বাঁচার স্বপ্নে বিভোর হয়ে
পান করছি অচেনা অনুভূতি,
সম্মোহিত হয়ে প্রাণের কথা
বলছে তোমার প্রিয় আকুতি ।
*****